সাত দিনে বাতিল ৮০০ চাকরি;নজিরবিহীন দুর্নীতিতে বাকরুদ্ধ বাংলা।
ফের প্রকাশ পেল রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের বড়সড় দুর্নীতি। রাজ্যের প্রায় ৮০০ জন শিক্ষককে অবৈধ নিয়োগের অভিযোগে চাকরি থেকে বহিস্কার করা হবে। আগামি সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়ে যাবে অবৈধ উপায়ে নিযুক্ত শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার ভরা আদালতে বিচারপতির সামনে নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করে অবৈধ উপায়ে নিযুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিলের কথা জানিয়ে দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)।
জানা যাচ্ছে ২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা মোট ৯৫২ জন শিক্ষকের মধ্যে ৮০০ জনের নিয়োগ অবৈধ। নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে এসএসসি সভাপতি সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান আগামী সপ্তাহে নোটিস দিয়ে অবৈধভাবে নিযুক্ত ৮০০ শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। দেখা গেছে ওই শিক্ষকদের ওএমআর শিটে প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে মিলছে না সার্ভারের নম্বর। কোন কোন শিক্ষক সাদা খাতা জমা দিয়ে পরীক্ষায় ৫৩ পেয়েছেন। সার্ভারে ১০ জন শূন্য পাওয়া শিক্ষকের ওএমআর শিটে নম্বর বেড়ে হয়েছে ৫৩। সার্ভার অনুযায়ী যাদের প্রাপ্ত নম্বর ১-২ এর বেশি নয়,তালিকায় তাদের কারও কারও নম্বর গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫১-৫২।
(আরও পড়ুন : শুরু হয়ে গেল নতুন নিয়মে UPSC CSE 2023 আবেদন;আবেদনের আগে সম্পূর্ণ জানুন)
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে জানতে চান নিয়োগে দুর্নীতি প্রমান হওয়া এইসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেবে কমিশন? বৃহস্পতিবার দুর্নীতিগ্রস্ত ওই সকল শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের কথা জানায় কমিশন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের ১৭ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে ওই সকল শিক্ষকদের নিয়োগ পত্র বাতিল করে দেওয়া হবে। এর আগেও কলকাতায় হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয়েছে অনেক অযোগ্য শিক্ষকের। কিন্তূ একসঙ্গে ৮০০ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন।
এর আগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্যে রাজনীতি। দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তৎকালীন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার বান্ধবী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়কে। উদ্ধার করা হয় কোটি কোটি টাকা।
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। সেই মেরুদন্ডের ধারক ও বাহক শিক্ষকরা। তাদের নীতি, আদর্শের উপর নির্ভর করছে দেশ ও জাতির আগামীর ভবিষ্যৎ। সেই শিক্ষকরাই যদি নীতি আদর্শ ভুলে অসৎ উপায় অবলম্বন করতে থাকে তবে আগামী প্রজন্ম কি শিখবে? চিন্তিত অভিভাবকরা।