WB DA News Update : ১০৫ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়েছে,আমার মুন্ডুটা কেটে নিন : মুখ্যমন্ত্রী

0
dearness allowance west bengal update news

ফেব্রুয়ারী মাসে পেশ করা রাজ্য বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৩ শতাংশ ডিএ (DA Case) বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয় রাজ্যের তরফ থেকে। তারপর অনেকেই মনে করেছিলেন বিক্ষোভরত সরকারি কর্মচারীরা ৩ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি হওয়ায় কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট হবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। বাজেটে ৩ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ বৃদ্ধিতে সরকারি কর্মচারীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন,তারা আন্দোলন বিক্ষোভের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন।

সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় হারে বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance West Bengal) দেওয়ার দাবিতে,ডিএ আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে গত ১ ফেব্রুয়ারী সমস্ত সরকারি দপ্তরে দু’ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হয়। তারপরে ১৩ ফেব্রুয়ারী ‘পেন ডাউন’ (Pen Down Strike) কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা,ওই দিন অনেক সরকারি কর্মী অফিসে এলেও কাজ করেননি। জানা যাচ্ছে সামনের ১০ মার্চ (শুক্রবার) সারা রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি,অন্যদিকে শহীদ মিনার চত্বরে বিগত ৪০ দিন ধরে চলছে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশন। লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ ও টানা অনশনের জেরে অনেকে গুরুতর অসুস্থ হয়েও পড়ছেন,ভর্তি করাতে হচ্ছে হাসপাতালে। তবুও তারা কোন অবস্থাতেই এক পা পিছু হটতে রাজি নন।

আন্দোলনকারীদের ঝাঁজ ক্রমশ বাড়তে থাকায় বিধানসভা রাজ্যর অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান ‘ডিএ নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন,কটাক্ষ করেন। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশই ঘোষণা করা হয়েছিল ডিএ (DA) প্রস্তাব। পঞ্চম পে কমিশন যা বকেয়া রেখে গিয়েছিল তা দেওয়া হয়েছে। কোন রাজ্যে পেনশন দেওয়া হয় না। আমাদের রাজ্যে দেওয়া হবে। সেটা কি বন্ধ করে দেওয়া হবে? এটাই কি চাইছেন বিরোধীরা?’

(বিজ্ঞপ্তি জারি করে ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করল সরকার;ভিক্ষা নিতে রাজি নয়,জানিয়ে দিল সরকারি কর্মচারীরা)

এর পরে ডিএ ইস্যুতে বক্তব্য রাখেন রাজ্যের মুখমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। তার দাবি কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের তুলনায় অনেক ছুটি দেওয়া হয় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের, ৯৯ শতাংশ ডিএ ও তার সঙ্গে ৬ শতাংশ মিলিয়ে ১০৫ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের। এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘আর কত চাই? কত দিলে সন্তুষ্ট হবেন? দয়া করে আমার মুন্ডুটা কেটে নিন,তাহলে যদি আপনারা সন্তুষ্ট হন। কিন্তু এর থেকে বেশি আর আমার কাছে পাবেন না।’ এর পর তিনি পেনশন প্রসঙ্গ তুলে জানান ‘দেশের কোন রাজ্য এখন অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন দেয় না। আমরা দিই। তাহলে এবার কি পেনশন বন্ধ করে দেব? পেনশন না দিতে হলে রাজ্য সরকারের হাতে অনেক টাকা থাকবে,ডিএ দিতে পারবো। ‘ তিনি কেন্দ্রীয় হারে ডিএ র সঙ্গে রাজ্য সরকারের ডিএ না এক করে না দেখার দাবি জানান। কারণ হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বেতন স্কেল আলাদা। রাজ্য যতটা পারছে ডিএ দিচ্ছে,ডিএ দেওয়া বাধ্যতামূলক নয় যে দিতেই হবে। তিনি আরও বলেন ‘ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকা ডিএ হিসাবে এখনও অবধি দেওয়া হয়েছে। আর কত দেব’। সরকারি কর্মচারীদের এদিন ‘নন্দলাল’ বলে কটাক্ষও করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য মোটেই ভালোভাবে নেননি সরকারি আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারীরা। তারা মুখ্যমন্ত্রীকে এইসব কথা বিধানসভায় না বলে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে গিয়ে বলার চ্যালেঞ্জ জানান। তাদের দাবি বকেয়া ডিএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম কথা বলছেন। তিনি যদি ডিএ দিতে না পারেন তবে তার স্পষ্ট ভাবে তা জানিয়ে দেওয়া উচিত।

(ডিএ মামলায় নতুন রায়;খুশি সরকারি কর্মচারীরা)

এর আগে কংগ্রেস নেতা কৌস্তব বাগচী,বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা শহীদ মিনারে সরকারি কর্মচারীদের ধর্নামঞ্চে গিয়ে পৌঁছান। সোমবার বিরোধী বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী,আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকী আন্দোলনকারীদের সমর্থন জোগাতে ধর্নামঞ্চে গিয়ে হাজির হন। তারা ডিএর দাবিতে এই আন্দোলনকে সমর্থন করে সরকারি কর্মচারীদের পাশে থাকার কথা বলেন। সামনের ১৫ মার্চ ফের সুপ্রিম কোর্টে উঠবে ডিএ মামলা,তার আগে রাজের বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের সরকারি কর্মচারীদের সমর্থন জোগানোই যথেষ্ট অস্বস্তি বাড়াবে রাজ্য সরকারের।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *