নয়া প্রকল্পে বই কিনতে গ্রন্থাগারগুলিকে ৫ কোটি দেবে রাজ্য সরকার।
মোবাইল,ইন্টারনেট আসার আগে মানুষ ভিড় জমাত লাইব্রেরি বা গ্রন্থাগারগুলোতে । বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের লাইব্রেরি গুলোতে গিয়ে বই পড়ার উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। শিশু থেকে বৃদ্ধ,ছাত্র থেকে চাকুরীজীবি সকলেই বই পড়তে ভিড় জমাত লাইব্রেরিগুলোতে। কিন্তূ বর্তমানে সময় পাল্টেছে। মানুষের মধ্যে কমছে বই পড়ার প্রবণতা। কোন প্রয়োজনীয় বই দরকার পড়লে মোবাইলে ডাউনলোড হয়ে যাচ্ছে এক নিমেষে।ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে অডিওস্টোরি (Audio Story),পডকাস্ট (Podcast)।
এইরকম এক পরিস্থিতিতে রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলিকে পুনরজীবিত করতে উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা গ্রন্থাগার দপ্তর। গ্রন্থাগার দপ্তরের তরফ থেকে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বই কিনতে টাকা দেয়া হবে গ্রন্থাগার গুলিকে। গ্রন্থাগার পরিষেবা অধিকার প্রকল্পের অধীনে রাজ্য সরকার বেসরকারি গ্রন্থাগার গুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে। প্রত্যেক বেসরকারি গ্রন্থাগারকে এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। গ্রন্থাগার পরিষেবা অধিকার প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ৫ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছে সরকার।
(আরও পড়ুন : ওয়েসিস স্কলারশিপ : ১৪০০০ টাকা দিচ্ছে সরকার,তাড়াতাড়ি আবেদন করুন)
তবে বরাদ্দ ২৫ হাজার টাকা পেতে হলে গ্রন্থাগারগুলিকে আবেদনপত্র জমা করতে হবে। আবেদনপত্র পাওয়া যাবে গ্রন্থাগার দপ্তরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে অথবা জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিকদের কাছ থেকে। আবেদনপত্র জমা করার পর গ্রন্থাগার দপ্তর সেগুলিকে যাচাই করে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে ওই গ্রন্থাগারটি প্রকল্পের টাকা পাওয়ার যোগ্য কি না।আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ধার্য করা হয়েছে ৩ ফেব্রুয়ারী।
তবে এই প্রকল্পের আওতায় কোন কোন আবেদনের যোগ্য তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে।কেবলমাত্র ক্লাব কাম গ্রন্থাগার,বেসরকারি ও অপোষিত গ্রন্থাগার,সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচালিত বেসরকারি ও অপোষিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীনে সাধারণ গ্রন্থাগারগুলি এই প্রকল্পে আবেদনের যোগ্য।
রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ বিষয়ে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন সরকার চাই রাজ্যের মানুষ আরো বেশি করে গ্রন্থাগার মুখী হোক। বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলি বই কিনে আরো যাতে বইয়ের তালিকা সমৃদ্ধ করতে পারে সেই কারণেই রাজ্যের এই উদ্যোগ। তিনি রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলিকে রাজ্যের দেওয়া শর্ত মেনেই এই প্রকল্পে আবেদন জানানোর অনুরোধ করেন।
অন্যেদিকে সরকারের এই উদ্যোগ নিয়ে দানা বেঁধেছ বিতর্ক। বিরোধী নেতৃত্বের দাবি রাজ্যের গ্রন্থাগার গুলিতে কোন বই কেনা হবে তার তালিকা গ্রন্থাগার দপ্তরের তরফ থেকে আগে থেকেই পাঠিয়ে দেয়া হয় গ্রন্থাগারগুলিতে। পাঠকের বইয়ের চাহিদার থেকে বেশি গুরুত্ব পায় সরকারি ফরমান। তাদের আরও দাবি ওই তালিকায় নির্দিষ্ট পরিমান টাকা খরচ করতে হয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই কিনতে,তার পরে অনুদানের টাকা বাঁচলে অন্য বই কেনা হয়।